এই কন্যা সন্তানটি বিক্রি হবে…

ছেলে প্রত্যাশি এক দরিদ্র দম্পত্তি ৪র্থবারের মতো
কন্যা সন্তানকে বিক্রির চেষ্টা করছেন

সিদ্ধান্তটি অনেক আগে থেকেই নেয়া ছিল, মেয়ে হলে এবারও শিশুটিকে তুলে দেয়া হবে অন্যের কোলে। বিধিবাম ৪র্থ বারের মতো মা লক্ষি বালার কোল জুরে ২৭দিন আগে ভমিষ্ট হয় আরও একটি মেয়ে সন্তান। ভূমিষ্ট হবার পর থেকেই রাগান্বিত দরিদ্র পিতা গজেন বর্মণ বরাবরের মতো এই মেয়েকেও বিক্রি করার জন্য লোক খুঁজছেন। এ ঘটনা কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার চৌবাড়ি পয়রা ডাঙ্গা গ্রামের।
গত ২দিন ঐ গ্রামে গিয়ে জানা যায়, কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার চৌবাড়ি পয়রাডাঙ্গা এলাকার রিক্সাচালক গজেন বর্মন ছেলে সন্তানের প্রত্যাশায় বারবার সন্তান গ্রহণ করছেন। কিন্তু মেয়ে জন্ম নেয়ায় বিক্রি করেছেন এর আগের ৩ মেয়েকে। এবার জন্ম নেয়া মেয়েকেও বিক্রির চেষ্টা করছেন। সন্তান জন্ম দিয়েও সন্তানহারা মা লক্ষি হয়ে পড়েছেন পাগল প্রায়। অভাব আর ছেলে সন্তান প্রত্যাশি গজেনের মুখের উপর কথা বলার সাহস তার নেই। যেকোনো অচেনা মানুষ বাড়ির দিকে আসলেই তার মনে হয় এই বুঝি  বুক খালি করে তার সন্তান নিয়ে যাবে। এমন অশঙ্কায় কাটছে তার দিন-রাত।
গজেন পেশায় রিক্সাচালক। নিজের বসতভিটাও নেই। দুরসস্পর্কের এক আত্মিয়ের বাড়িতে আশ্রিত। তার জিরজিরে ছনের ঘরটির বেড়ার ফাঁক দিয়ে দারিদ্রতা স্পষ্ট ফুটে ওঠে। মায়ের মমতার শক্তি এ দারিদ্রতার কাছে হার মানে ফলে মমতা বিক্রি করে তাকে পেটে অন্ন দিতে হয়, পরনে বস্ত্র। তারপর আবারো চলে সন্তান জন্মে র আয়োজন।
নিজের নিয়তির কথা ভেবে স্বামীর কথা মেনে নেয়। তাছাড়া প্রতিবাদ করার সাহসও তার নেই। দুবছর আগে চার মাসের বৈশাখীকে চারশত টাকা ও একটি শাড়ির বিনিময়ে তুলে দিয়েছিলেন নি:সন্তান নরসুন্দর বাবুলের কাছে। সেবারও লক্ষি কন্নাকাটি করে, নাওয়া খাওয়া ছেড়ে প্রতিবাদ করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু স্বামীর  হুঙ্কারাদেশেই বাধ্য হয়েছিলেন। কিন্তু  ভুলে যেতে পারেন নি। এখনও ঐ বয়সি কোনো শিশুর কান্না শুনলে ছুটে যান সেদিকে নিজের সন্তান ভেবে।
এলাকাবাসী শ্বাশত ভট্রাচার্য, সুব্রত ভট্টাচার্য, বাবলু, লিটন চৌধুরী,  অনিমেষ, সুখচরণ, মিনতি , মালঞ্চসহ অনেকে জানান, গজেন দুই মেয়ে সন্তান সহ লক্ষিকে বিয়ে করে মেয়ে দুটিকে বিক্রি করে দেয়। পরে গজেনের ঘরে আবারো একটি মেয়ে হলে তাকেও বিক্রি করে। এবারো মেয়ে হলে বিক্রির চেষ্টা চলছে।
লক্ষি জানায়, এমন কপাল পোড়া ছোওয়া জন্ম দিয়া নিজের কাছত থুবার পাই না। বেটির বাপই যদি তাক মানুষের কাছোত দিয়ে দেয় মুই আর ক্যাদন করি আটকাইম।
এ ব্যাপারে গজেন বর্মন জানান, অভাবের কারণে সন্তানদের আমি অন্য মানুষের কাছে দিয়েছি। তবে বিক্রি করি নাই, তারা খুশি হয়ে যা দিয়েছে তাই নিয়েছি। আমাদের  পেটেই চলে না, তার মধ্যে মেয়ে মানুষ করে বিয়ে শাদি দিব কেমন করে। তবে ছেলে সন্তান হলে কষ্ট করে হলেও মানুষ করার কথাও জানায় গজেন ও তার স্ত্রী লক্ষি।
গজেনের আর্থিক অবস্থা ভালো না থাকায় এর আগের সন্তানদেরও অন্য লোকের কাছে দিয়েছেন বলে জানিয়ে ৯নং ওয়ার্ডের পৌর কাউন্সিলর শহিদুল ইসলাম জানান, পরিবারটিকে পৌরসভার প থেকে মাঝে মাঝে সাহায্য সহযোগিতা করা হয়।

লিংক- http://www.jaijaidin.com/details.php?nid=149556
আরও পড়ুন: http://www.somewhereinblog.net/blog/ALAMGIR250205

১ টি মন্তব্য

  1. Parimal Mazumder said,

    সেপ্টেম্বর 5, 2009 Project Management 6:09 পুর্বাহ্ন

    লেখাটা ভারো হয়েছে।


এখানে আপনার মন্তব্য রেখে যান